এ কে কামাল
একটি জাতির স্বতন্ত্র ভাষার অস্তিত্ব তখন দাবী করা যায় যখন ঐ ভাষার জন্যে পরিপূর্ণ একটি বর্ণসমষ্টি বা বর্ণমালা আবিষ্কার হয় এবং ঐ বর্ণগুলোর সুনির্দিষ্ট নির্ভুল উচ্চারণ নির্ধারণ করা হয়। সে নিয়ম মেনে আমাদের প্রিয় বাংলাভাষার জন্যেও একটি সুনির্দিষ্ট বর্ণসমষ্টি বা বর্ণমালা তৈরী করে তার একটি সুনির্দিষ্ট উচ্চারণবিধি প্রণয়ন করা হয়েছে। সে উচ্চারণবিধি অনুযায়ী আমরা পাই----অ (স্বরে অ), আ (স্বরে আ), ই (হ্রস্ব ই), ঈ (দীর্ঘ ই), উ (হ্রস্ব উ),
ঊ (দীর্ঘ উ), ঋ (রৃ), এ (এ), ঐ (ওই), ও (ও), ঔ (ওউ),
১১টি
ব্যঞ্জণবর্ণের উচ্চারণস্থান এবং উচ্চারণস্থান অনুসারে তাদের নাম ঃ
ক খ গ ঘ ঙ (কণ্ঠ বা জিহ্বামূল) কণ্ঠ বা জিহ্বামূলীয় বর্ণ
চ ছ জ ঝ ঞ (তালু) তালব্য বর্ণ
ট ঠ ড ঢ ণ (মূর্ধ) মূর্ধন্য বর্ণ
ত থ দ ধ ন (দন্ত) দন্ত্য বর্ণ
প ফ ব ভ ম (ওষ্ঠ) ওষ্ঠ্য বর্ণ
স র ল শ ষ
স হ ড় ঢ় য়
ৎ ং ঃ (চন্দ্রবিন্দু), ঁ
৩৯টি
অর্থাৎ ১১+৩৯=৫০টি বর্ণই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে ।
(যদিও কোনো কোনো বইতে ‘ক্ষ’ এবং ‘ব’ (অন্তঃস্থ ব) নামে বর্ণগুলো দিয়ে ৫১/৫২টি দেখানো হয়েছে) ক+ষ=ক্ষ, হ+ম=হ্ম, স+থ=স্থ, দ+ধ=দ্ধ এগুলো সংযুক্ত বর্ণ। অন্তঃস্থ ব নামে এ বর্ণের কোনো প্রয়োগ নেই)
বর্ণের মাত্রাঃ
পূর্ণমাত্রার বর্ণ (৩২টি)
অ, আ, ই, ঈ, উ,ঊ,ক,ঘ, চ, ছ, জ, ঝ, ট, ঠ, ড, ঢ, ত, দ, ন, ফ, ব, ভ, ম, য, র, ল, ষ, স, হ, ড়, ঢ়, য়
অর্ধমাত্রার বর্ণ (৮টি)
ঋ, খ, গ, ণ, থ, ধ, প, শ
মাত্রাহীন বর্ণ (১০টি)
এ, ঐ, ও, ঔ, ঙ, ঞ, ৎ, ং, ঃ, (চন্দ্রবিন্দু), ঁ
কিন্তু নিম্নলিখিত বর্ণগুলো কখন যে আমাদের অজান্তে বিকৃত হয়ে ভুল উচ্চারণে গর্হিত হয়ে যাচ্ছে তা আমাদের অনেকের জানা নেই। যেমন-
অ (অরু), ন (দন্তান্ন), ৃ (রৃফলা), শ (তালিব্যাশ্য), ঙ (উম), স (দন্তাস্য), জ (বৈর্কাজ্য),
ং (অনুষ্কার), ঞ (নিঅ), ঃ (বিসগ্যর), ণ (মধ্যান্যন্ন)
অথচ উল্লিখিত বর্ণগুলোর সঠিক উচ্চারণ হওয়ার কথা নিম্নরূপঃ
অ (স্বরে অ), ন (দন্ত ন), ৃ (রৃ-কার), শ (তালব্য শ), ঙ(উঁঅঁ), স (দন্ত স),
জ (বর্গীয় য), ং(অনুস্বার), ঞ(ইঁঅঁ), ঃ (বিসর্গ), ণ (মূর্ধন্য ণ)
(কোনো ছেলে/মেয়ে এভাবে সঠিক উচ্চারণ করলে তার টিচার তার গালে থাপ্পড় মারার প্রমাণও রয়েছে।)
ডিকশনারি বা ব্যাকরণের অনুসরণে নিম্নলিখিত পর্যালোচনা ঃ
⇛ ব্যাকরণ বিধিবহির্ভূত কতগুলো ভুল পদ্ধতি যথা -মোঃ, ডাঃ, লিঃ, খ্রিঃ, প্রোঃ, সঃ, পিং, পীং, ইং, নং, সাং/এস,এস,সি/এস.এস.সি/ এইচ,এস,সি/এইচ.এস.সি/এম,এ/এম.এ/বি,এ/বি.এ/বি,এস,সি/ বিএস,সি/ষ্টোর/ষ্টেশন/ষ্টাফ/ষ্টার/ম্যাজিষ্ট্রেট/রেজিষ্টার//S,S,C/S.S.C/H,S,C/B,A/B.A/B,Sc/ B.Sc/M,A/M.A/C,W/C.W(Class Work)/H,W/H.W(Home Work) অনেক শিক্ষক তথা বিভিন্ন লেখকের বই বা ব্যাকরণে দাপটের সাথে রাজত্ব করছে যা বোধগম্য নয়। অথচ
ব্যাকরণের সংক্ষেপিকরণের নিয়মানুযায়ী এগুলোর শুদ্ধরূপ -- মো./মু., ডা., লি., প্রো., প্রা., স., পিতা, ইংরেজি (তারিখ লেখার ক্ষেত্রে ইং বা ইংরেজি না লিখে খ্রিষ্টাব্দ/খ্রি. হওয়ার কথা), এস.এস.সি./এসএসসি, এইচ.এস.সি./এইচএসসি, স্টোর/স্টেশন, স্টাফ/স্টার, ম্যাজিস্ট্রেট/রেজিস্টার, রেজিস্ট্রার/S.S.C., SSC/H.S.C., B.A./BA, B.Sc./BSc, M.A./MA, C.W./CW(Class Work/H.W. (Home Work) অর্থাৎ
ব্যাকরণের সংক্ষেপিকরণের ক্ষেত্রে (ইংরেজি বা বাংলা উভয়ক্ষেত্রে) ‘. (ফুলস্টপ)’ এর কথা বলা হয়েছে। কোথাও , (কমা) বা ঃ (বিসর্গ) এর কথা উল্লেখ নেই।
⇛ এস. এস. সি (সি-এর পরে ‘.’ না দিলে) এভাবে লিখলে পুরো অর্থ দাঁড়ায়- সেকেন্ডারি স্কুল সি। আর এস. এস. সি. এভাবে লিখলে পুরো অর্থ দাঁড়ায়- সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট।
⇛ বি. এ এভাবে লিখলে পুরো অর্থ দাঁড়ায়- ব্যাচেলর অব এ। আর বি. এ. এভাবে লিখলে পুরো অর্থ দাঁড়ায়- ব্যাচেলর অব আর্টস। তাহলে কোনটা লেখা উচিত?
⇛ বিদেশি শব্দে ঈ, ঊ, ঋ, ী-কার, ও ৃ কার ব্যবহার করা যায় না। আবার বিদেশি শব্দে ঙ, ছ, ঞ, ঢ, ণ, য, ষ, ৎ ও ঃ বর্ণগুলো কখনো ব্যবহার করা যায় না।
⇛ স্কুল-কলেজের বিভিন্ন সনদপত্র/প্রশংসাপত্র লিখতে গিয়ে ‘সনদ’ এবং ‘পত্র’-কে আলাদা করে লেখা হয় যা মোটেও শুদ্ধ হতে পারেনা। শুদ্ধ হবে ‘সনদপত্র’(দুটি শব্দ সংযোগ করে)।
যদিও ইতোমধ্যে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে বাংলা একাডেমি বা দৈনিক পত্রিকাগুলোতে। কিন্তু প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল বা কলেজের অনেক শিক্ষক, অফিস-আদালতের লোকজন সর্বোপরি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যেন এসব ব্যাপারে মোটেও সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
⇛ ণ-ত্ব বিধান বা ষ-ত্ব বিধান, সাধুভাষা-চলিতভাষা যদিও সবক্লাসের সিলাবাসভুক্ত এবং প্রায় পরীক্ষাতেও আসে কিন্তু বাস্তবক্ষেত্রে এসে ৯৫% মানুষ এগুলো বোঝে না। এমনকি ব্যাকরণ বইয়ের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়েও সাধু-চলিত মিশ্রণ করে এবং যে প্রশ্নের মধ্যে উল্লেখ থাকে ‘সাধু-চলিত ভাষার মিশ্রণ দূষণীয়’ সে প্রশ্নপত্রেও অসংখ্যা সাধু-চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটানো হয়। যেমন - বিভিন্ন অপরিচিত লেখকের ব্যাকরণ বইতে তো অসংখ্য অযৌক্তিক নিয়ম দেখা যায়। জনাব মাহবুব আলমের ডিগ্রির জন্যে লেখা বইয়ের ২০০২ সালের বিভিন্ন বোর্ড-এর প্রশ্নপত্রেও ‘‘দুই, সেই, এই সেবার তাহাদের ...........” এ ধরনের বিভিন্ন সাধু-চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বলা যায়, যেহেতু এগুলো স্কুলকলেজে স্টাবলিজড করা যাচ্ছে না সেহেতু এগুলোকে বৈধ ঘোষণা করলে ভাষার তেমন কোনো ক্ষতি হয়না বরং ভুলের মহড়া দূর হয়।
এছাড়াও পরাশ্রিত শব্দ বা বর্ণসমষ্টিগুলোকে আলাদা করে লিখে যেন লেখার নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। যেমন- বই গুলি, শিক্ষক বৃন্দ, সেবা সমূহ, বিচারক সহ, সম্মান জনক, জেলা ভিত্তিক, অনুগ্রহ পূর্বক, জন গণ, বাংলা দেশ ................... । এ শব্দগুলোর মাঝে ফাঁক না করে একসাথে লেখার কথা, যেমন- বইগুলি, শিক্ষকবৃন্দ, সেবাসমূহ, বিচারকসহ, সম্মানজনক, জেলাভিত্তিক, অনুগ্রহপূর্বক, জনগণ, বাংলাদেশ।
⇛ ফেনী বানানকে কেন যে ফেণী লেখা হয় বোধগোম্য নয়। আজীবন দেখলাম ফেনী। তাছাড়া উৎপত্তিগত বা নামকরণের দিক থেকেও পাই--
ফেনী নদীর নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয়েছে ফেনী।মধ্যযুগে কবি ও সাহিত্যিকদের কবিতা ও সাহিত্যে একটা বিশেষ নদীর স্রোতধা ও ফেরী পারাপারের ঘাট হিসেবে আমরা ফনী শব্দ পাই। ষোড়শ শতাব্দীতে কবি কবীন্দ্র পরমেশ্বর পরাগলপুরের বর্ণনায় লিখছেনঃ “ফনী নদীতে বেষ্টিত চারিধার,পূর্বে মহাগিরি পার নাই তার।” সতের শতকে মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত “বাহরিস্তান-ই-গায়েবীতে” ফনী শব্দ ফেনীতে পরিণত হয়। আঠার শতকের শেষভাগে কবি আলী রেজা প্রকাশ কানু ফকির তার পীরের বসতি হাজীগাওর অবস্থান সম্পর্কে লিখছেনঃ কবি মোহাম্মদ মুকিম তার পৈতৃক বসতির বর্ণনাকালে বলেছেনঃ “ ফেনীর পশ্চিমভাগে জুগিদিয়া দেশে.........।“ বলাবাহুল্য, তারাও নদী অর্থে ফেনী ব্যবহার করেছেন। মনে হয় আদি শব্দ ‘ফনী’ মুসলমান কবি ও সাহিত্যিকদের ভাষায় ফেনীতে পরিণত হয়েছে।
১৮৭২-৭৪ সালের মধ্যে মোগল আমলের আমীরগাও থানা নদী ভাঙ্গনের মুখোমুখি হলে তা ফেনী নদীর ঘাটের অদূরে খাইয়অ্যা্রাতে স্থানান্তরিত হয়েছিল। ঐ থানাটি কোম্পানীর কাগজ পত্রে ফেনী থানা (ফেনী নদীর অদূরে বলে) নামে পরিচিত হয়।
অতঃপর ১৮৭৬ সালে নতুন মহকুমার পত্তন হলে খাইয়অ্যা্রা থেকে থানা দপ্তরটি মহকুমা সদরে স্থানান্তরিত হয় ও নতুন মহকুমাটি ফেনী নামে পরিচিত হয়।
‡dbxi wewfbœ ms¯’v
wb¤œiƒct
⇛ ফেনী শহরের কয়েকটি স্থানে বানানের করণদৃশ্য -- ফেনী মডেল হাই স্কুলের নেমপ্লেটে লেখা হয়েছে- নব নির্মিত/গ্রেইট (নবনির্মিত গেইট)।
⇛ ফেনীর সবচেয়ে গর্ব কাজী জহির রায়হানের ভুলেভরা স্মৃতিফলক মলিন হয়ে গেছে বিভিন্ন পোস্টারে।
⇛ স্টাম্পপোর্ড ইউনিভারসিটিকে নিয়ে বাংলার বিজ্ঞজনেরা পর্যন্ত যেন হৈ হৈ রৈ রৈ কান্ড ঘটান। অথচ তাতেও কোর্সগুলোর নাম লিখতে গিয়ে লিখেন- বিএস,সি/বিএস.সি ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং?
⇛ বিসিএস পরীক্ষার বইতে লেখে ‘বি,সি,এস’
এভাবে যারা বাংলাভাষার রক্ষকের ভূমিকায় তাঁরাই যদি বাংলাভাষাকে ভক্ষন করে ফেলেন তাহলে আর কয়দিন ভাষা বেঁচে থাকবে।
⇛ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ-কে লিখা হয় ডাঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ
⇛ হাজী মুহম্মদ মুহসীনকে লিখা হয় হাজী মোহাম্মদ মহসীন
⇛ আধুনিক বানানরীতি অনুসারে সরকারি, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, কলোনি, স্পিকার শুদ্ধ (যদিও অনেক ক্ষেত্রে সরকারী, জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী, কলোনী, স্পীকার লেখা হয়)।
⇛ ইংরেজিভাষা থেকে আগত শব্দগুলোর ক্ষেত্রে ‘ ী’ বর্জন করে ‘’ি ব্যবহার বাঞ্ছনীয়। তারিখ লিখতে লা, রা, ই বর্জন করাই শোভন এবং আধুনিক। প্রধানতঃ, সাধারণতঃ, মূলতঃ না লিখে প্রধানত, সাধারণত, মূলত লেখাই আধুনিক।
⇛ স-এর পর ন এবং ষ-এর পর ণ ব্যবহার করতে হবে।
⇛ ভূগোল ও দূরান্ত লিখতে ~-Kvi n‡e wKš‘ fyeb I `yišÍ wjL‡Z y কার হবে।
⇛ হিজরি, ইংরেজি, খ্রিষ্টাব্দ, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, প্রাইমারি, লাইব্রেরি, লিগ, নোটিস, ডিগ্রি, ট্রাস্ট, স্ট্রিট, স্টিল, স্টেশন, পোস্ট অফিস, অ্যাকাডেমি, উচিত, নাতসি, হেমায়েত, সাহাদাত, লুতফর, ফোরাত ইত্যাদি শুদ্ধ বানান।
⇛ দ্বিধাগ্রস্ত wKQz evbvb...
লক্ষ্মী, যক্ষ্মা বানানে ক্ষ-এর নচিে একটা ম-ও আছ।ে (পররেগুলো শুদ্ধ)
দূর বানানে র্দীঘ ঊ-কার; কন্তিু র্দুনীত,ি র্দুলভ, র্দুগম, র্দুনাম, র্দুর্ধষ, র্দুদনি, দুঃস্থ, দুষ্প্রাপ্য, র্দুবল, র্দুগ ইত্যাদতিে হ্রস্ব উ-কার। দুঃসর্ম্পকরে আত্মীয় না, দূরসর্ম্পকরে আত্মীয়।
⇛ ‘পুনরায়’ শব্দটাকে অনেকে অনেকভাবে লিখে অথচ এর একমাত্র বানান ‘পুনরায়’। তদরূপ ‘পুনর্বাসন’ শব্দকেও কেউ ‘পূর্ণবাসন’, কেউ ‘পূন:বাসন’ বিভিন্নভাবে লিখে থাকে।
⇛ ‘সাক্ষী ’ শব্দটাকে যেন ব্যাপকভাবে ‘স্বাক্ষী’ হিসেবে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
⇛ আমাদের দেশে বা আমাদের ব্যাপকরণে ‘আত্মা’ কে আত্ধসঢ়;মা বা ‘আত্মীয়’ কে আত্ধসঢ়;মীয় উচ্চারণ করার প্রবণতা নেই কিন্তু ‘গ্রীষ্ম’কে কেন গ্রীষ্ধসঢ়;ম, ‘বিষ্ময়’ কে কেন বিষ্ধসঢ়;ময় উচ্চারণ করা হয় তা বোধগম্য নয়। গ্রীষ্ম-এর উচ্চারণ গ্রীষ্ধসঢ়;ষ, বিষ্ময়-এর উচ্চারণ বিষ্ধসঢ়;ষয় হওয়ার কথা। কারণ ব্যাকরণের নিয়মানুসারে এসবক্ষেত্রে পূর্ববর্ণের দ্বিত্ব উচ্চারণ।
⇛ এই নিয়মগুলো শুধু কলকাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা বাংলা একাডেমিতে রয়ে গেছে। ছাপাখানার বইতে বা স্কুল কলেজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। এর কারণ হয়তো স্কুল-কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষকগণ ডিকশনারি বা বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেন না।
⇛ মেডিক্যাল, সার্জিক্যাল, অপটিক্যাল, কেমিক্যাল, ফার্মাসিউটিক্যাল, অ্যাকাডেমিক্যাল, ক্যালসিয়াম সঠিক।
⇛ 'ভুল' শব্দটি লখোর সময়ই অনকেে ভুল করে লখেে 'ভূল'। ভাষাশহীদদরে প্রতি সম্মান জানাতে যে প্রভাতফরেি হয়, সখোনে হাতে ফুলরে তোড়া নয়িে রক্তলাল-অক্ষরে লখিে 'শ্রদ্ধাঞ্জল'ি জানানো হয়। কন্তিু বশেরি ভাগ সংগঠন, প্রতষ্ঠিান বা ব্যক্তরি শ্রদ্ধা নবিদেনে সামান্য খাদ থকেে যায়; তারা লখেে 'শ্রদ্ধাঞ্জলী'! অথচ শ্রদ্ধাঞ্জলি বা গীতাঞ্জলি শুদ্ধ।
⇛ রাজধানীসহ সারাদেশের দোকানপাট, প্রতষ্ঠিান-ভবনরে সাইনর্বোডগুলোর দকিে তাকালইে বাংলা ভাষার করুণ অবস্থা বোঝা যায়।
⇛ 'বগেম রোকয়ো সরণ'িকে ভুল বানানে লখো হচ্ছে 'বগেম রোকয়ো স্মরণী' বা 'বগেম রোকয়ো স্বরণী'। সরণি মানে পথ বা রাস্তা। র্অথাৎ রোকয়োর নামরে পথটি হচ্ছে রোকয়ো সরণ।ি
⇛ বিদায়ী আত্মা, আসছে আগামী অথচ বিদেহী আত্মা, আগামীকাল শুদ্ধ
⇛ প্রায় সব শক্ষিাপ্রতষ্ঠিানে এখনো লখো হয় র্বজতি 'সরকারী' বানানট।ি শক্ষর্িাথীরা বদ্যিালয়ে ঢুকতইে ভুল বানানটি শখিে ফলে।ে তাছাড়াও লেখা হয়... সনদ পত্র, প্রাঃ, সঃ, ইং, মোঃ ডাঃ ইত্যাদি।
⇛ ৭ম, ৮ম, শ্রেণীর জন্যে প্রণীত ব্যাকরণ বইগুলোতে ভাষার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বা সাধু-চলিত ভাষা লেখার নিয়মাবলীতে গিয়েও সব মিশিয়ে ফেলেন যেন হুজুরেরা ওয়াজ করেন পরের জন্য নিজের জন্যে নয়।
দ্ব শুধু তাই নয় ২০তম বা অন্য যেকোনো বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও (সেট নম্বর না লিখিলে উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাবে/দুটি বা দু’টি-কে লেখা হয়েছে দুইটি/মুর্ধন্য ষ-এর স্থলে লেখা হয়েছে নিত্য মূধণ্য ষ) সাধু চলিত ভাষার মিশ্রণ ঘটেছে।
⇛ নিম্নলিখিত লিঙ্গান্তরগুলো যদিও প্রায় ব্যাকরণ বইতে পাওয়া যায় কিন্তু বাস্তবতার সাথে মিলে না-
দ্ব দুঃখ-- দুঃখিনী(‘দুঃখ’ শব্দটা দ্বারা কি পুরুষ বোঝানো হয়েছে)
⇛ গ্রাহক-গ্রাহিকা (‘গ্রাহক’ দ্বারা তো পুরুষ মহিলা উভয়ই বোঝানো হয়ে থাকে)
প্রেরক-প্রেরিকা (ঐ)
মানব-মানবী
ঈশ্বর-ঈশ্বরী
ফলবান-ফলবতী
ভগবান-ভগবতী
জ্ঞানী-জ্ঞানীনী
রাষ্ট্রপ্রধান-রাষ্ট্রপ্রধানী
⇛ একটি অদ্ভুত বিষয় যে, বিভিন্ন সার্টিফিকেট বা প্রত্যয়নপত্রের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নাম-ঠিকানা লেখার পর প্রত্যয়নটা না করেই দাঁড়ি(।) দিয়ে দেয়া হয় অর্থাৎ
⇛ এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, করিম, পিতা-রহিম, গ্রাম-মিলনপুর, উপজেলা- ফেনী সদর, জেলা-ফেনী। সে আমার পরিচিত/সে অত্র বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর নিয়মিত ছাত্র/সে অত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত/সে অত্র জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
এখানে ২টি বাক্য। কিন্তু প্রথম বাক্যটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেল যার ইংরেজি অনুবাদ করাও সম্ভব নয়।
অথচ বাক্য ২টি একত্র করে নি¤œরূপ লেখার কথা-
এ মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, করিম, পিতা-রহিম, গ্রাম-মিলনপুর, উপজেলা- ফেনী সদর, জেলা- ফেনী আমার পরিচিত। বা
⇛ এ মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, করিম, পিতা-রহিম, গ্রাম-মিলনপুর, উপজেলা- ফেনী সদর, ফেনী জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
ইহাই একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থবোধক বাক্য হয়। জেলার পরে দাঁড়ি ব্যবহার করলে পূর্ণাঙ্গ বাক্য হয় না।
⇛ আবার অনেকে চারিত্রিক সনদ লেখার ক্ষেত্রে বা অন্যকোনো প্রত্যয়ন লেখার ক্ষেত্রে ‘স্থায়ী বাসিন্দা’ বা ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বা আরও অনেক কথা উল্লেখ করে থাকে যা অপ্রাসঙ্গিক। স্থায়ী বাসিন্দা সনদ তো একজন ডাক্তার বা অফিসার দিতে পারেন না বা রাষ্ট্রদ্রোহীতার নিশ্চয়তাও দিতে পারেন না।
⇛ দরখাস্ত বা ঠিকানা লেখার ক্ষেত্রে মাননীয় বা জনাব-এর শেষে কমা(,) ব্যবহার কোনক্রমেই ব্যাকরণসিদ্ধ নয়।
মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বা বিজ্ঞমহলের একটু সজাগদৃষ্টির জন্যেই বিভিন্ন ডিকশনারি বা ব্যাকরণকে সামনে রেখেই এগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে।
(কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যদি উপরের লেখাগুলোর কোথাও কোনো ফন্ট পরিবর্তন হয়ে শব্দ বিক্রিত হয় তারজন্য ক্ষমাপ্রার্থী)
No comments:
Post a Comment